বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০১৭

আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থাঃ গণতন্ত্র ও শাসন। -বি.কে বিচিত্র

গণতন্ত্র’ শব্দটির ব্যুত্পত্তিগত অর্থ জনগণের ক্ষমতা। অর্থাত্ সরকার বা শাসন ব্যবস্থা যখন জন অভিমত দ্বারা পরিচালিত হয় তখন তাকে গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তার মানে সরকার পরিচালনায় যখন জনগণের অভিমত প্রতিফলিত হয় তখন উক্ত শাসন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক সরকার বা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বলা হয়। আমেরিকার তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন তাঁর গেটিসবার্গ এড্রেস-এ বলেছিলেন, গণতন্ত্র জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা গঠিত সরকার এবং জনগণের জন্য সরকার। গণতন্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন জন বিভিন্ন অভিব্যক্তি প্রকাশ করে থাকেন। শুধু তাই নয়, সারা বিশ্ব আজ গণতন্ত্রের প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। অনেকে বলেন, প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীতে গণতন্ত্র বা জনগণের শাসন বলে কিছু নেই।
তাদের মতে, ‘গণতন্ত্র’ একটি মুখরোচক শব্দ ছাড়া আর কিছুই নয়। পৃথিবীর কোথাও জনগণের শাসন আছে বলে তারা মনে করেন না। আসলে জনগণের নামে গুটিকয়েক ব্যক্তিই রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনা করে থাকেন বলে তাঁরা মনে করেন। জনগণের অধিকার শুধু ভোট দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ভোটের পরে শাসনকার্য পরিচালনায় জনগণের কোনো ভূমিকা আছে বলে তারা মনে করেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, গণতন্ত্র এমন একটি সরকার যেখানে প্রত্যেক সদস্যের অংশগ্রহণ রয়েছে। এ অংশগ্রহণ কথাটিও বিতর্কিত হয়ে পড়েছে।
এখন দেখা যাক, গণতান্ত্রিক সরকার বা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় কিভাবে জনগণ সরকার পরিচালনায় বা শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। আজ থেকে হাজার হাজার বছর পূর্বে প্রাচীন গ্রিস এবং রোমের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নগর রাষ্ট্রগুলোতে (City State) অতিমাত্রায় ক্ষুদ্র আয়তন এবং স্বল্প জনসংখ্যার কারণে সভা-সমিতির মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সরাসরি জনগণের মতামত নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। এটাকে প্রত্যক্ষ বা বিশুদ্ধ গণতন্ত্র বলা হয়। কালের পরিক্রমায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রাচীন যুগের নগর রাষ্ট্রের বিলুপ্তি ঘটেছে। আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জনক ম্যাকিয়াভেলি ষোড়শ শতাব্দীতে আধুনিক জাতীয় রাষ্ট্রের (National State) গোড়াপত্তন করেন। এ জাতীয় রাষ্ট্রের বিশাল আয়তন এবং বিপুল জনসংখ্যাহেতু প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র সম্ভব নয়। তাই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই জনগণের কল্যাণে রাষ্ট্রীয় শাসনকার্য পরিচালনা করেন। এ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরই জন অভিমত বা জনগণের কণ্ঠস্বর বলে মনে করা হয়। তারা নির্বাচিত হয়ে জনগণের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করবে বলে আশা করা হয়। এটাকে পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র বলা হয়। এ প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাই আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি।
তবে অষ্টাদশ শতাব্দীর ফরাসি রাষ্ট্র-দার্শনিক রুশো পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক সরকার বলতে নারাজ। কারণ, তিনি মনে করেন, জন প্রতিনিধিরা মূলত জনস্বার্থে কাজ না করে তাদের আত্মস্বার্থ রক্ষার্থে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। তাই তিনি প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে সমর্থন দিয়েছেন। যে ব্যবস্থায় জনস্বার্থ সুরক্ষিত থাকে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক অ্যারিস্টটলের শিক্ষাগুরু প্লেটো গণতান্ত্রিক সরকার বা শাসন ব্যবস্থাকে সবচেয়ে অযোগ্যের শাসন বা সরকার ব্যবস্থা বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর মতে, যেহেতু গণতন্ত্র বেশির ভাগ জনগোষ্ঠীর দ্বারা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থা, সেহেতু গণতন্ত্র কখনো উন্নতমানের শাসন ব্যবস্থা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। কারণ, প্রত্যেক রাষ্ট্রেই বিদ্বান, সুপণ্ডিত এবং যোগ্য লোকের তুলনায় অযোগ্য, অশিক্ষিত এবং অজ্ঞ লোকের সংখ্যাই বেশি। সুতরাং বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীর শাসন মানেই প্রকারান্তরে অযোগ্যের শাসন। যেখানে মুড়ি-মিশ্রি একদামে বিক্রি হয়। মাথা গণনার দ্বারা সবকিছু নির্ধারিত হয়। তাঁর মতে, গণতন্ত্র সংখ্যায় বিশ্বাসী, গুণে নয়। তাই গণতন্ত্র কখনো উন্নতমানের শাসন ব্যবস্থা হতে পারে না।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক অ্যারিস্টটলও গণতন্ত্রকে স্বাগত জানাতে পারেননি। শুধু তাই নয়, তিনি গণতন্ত্রের বিকৃত রূপ জনতাতন্ত্রের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন। আমরা জানি, ১৬৮৮ সালের গৌরবোজ্জ্বল বিপ্লবের পটভূমিতে ব্রিটেনে সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার গোড়াপত্তন হয়। ১৬৮৮ সালের পূর্বে ব্রিটেনে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র (Absolute Monarchy) বা অসীম ক্ষমতাধর রাজতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। প্রশাসন অর্থ রাজা, আইন অর্থ রাজা, বিচার অর্থ রাজা, একব্যক্তির খেয়ালিপনার ভিত্তিতে কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হতো। পার্লামেন্টকে রাজা হাতের খেলনা হিসেবে ব্যবহার করতেন। সে সময়ের লং পার্লামেন্টের অবাঞ্ছিত স্মৃতি আজও ব্রিটেনবাসীর স্মৃতিতে নিষ্ঠুরভাবে গ্রথিত রয়েছে। যাই হোক, রাজার এ স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে শুরু হয়ে গেল রাজার সঙ্গে পার্লামেন্টের প্রভাবশালী সদস্যদের লড়াই। তার মানে রাজতন্ত্র বনাম গণতন্ত্রের লড়াই

শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭

খুঁজে পেলাম স্বাধীনতা -বি.কে হাজারী

খুঁজে পেলাম স্বাধীনতা
         বি.কে হাজারী

---------------------------------------
অামি তো দেখিনি
             কিভাবে পেলাম স্বাধীনতা?
অামি শুনেছি তারই কথা
           '৭১ এর ভূলুণ্ঠিত মানবতা।
অামি তো দেখিনি
         স্বাধীনকামী বীর সন্তানদের
 অামি শুনেছি তারই কথা
           নির্যাতিত মা- বোনদের।
অামি তো দেখিনি
        সেই স্বাধীনতার ঘোষক
পড়েছি ইতিহাস জেনেছি অামি
       কারাই ছিল দেশের শোষক।
   অামি তো দেখিনি
             ' ৭১ এর সেই মুক্তিযুদ্ধ
    হয়েছি শুধু অামি
          দেশ প্রেমিকের অাদর্শে শুদ্ধ।
অাজ অামি গর্বিত সন্তান
        অামার পরিচয়,অামি বাঙালী
পৃথিবীখ্যাত ইতিহাস নিয়ে
           অামি বাংলায় কথা বলি।।

রবিবার, ৫ মার্চ, ২০১৭

দেশ-কবি সিরাজ তালুকদার

"দেশ"
সিরাজ তালুকদার

ছবির মতন গ্রামখানি
দেখতে অনেক ভালো,
সেই যে আমার জন্মভূমি
লাল-সবুজের আলো।
সবুজ ঘেরা মাঠ- প্রান্তর
মাছ ভরা দিঘী,
সন্ধ্যে বেলা জোনাকিরা
করে ঝিকিমিকি।
শস্যকণা দোল খায়
একটু হাওয়া হলেই,
পানকৌড়ি ডূব দেয়
একটু জল পেলেই।
ধন-সম্পদে ভরা মাটি
অঙ্গে যখন মাখি,
গর্বে আমার বুক ভরে যায়
সোনার চেয়েও খাঁটি ।

সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

মায়ের ভাষা- কবি আরিফ হাসান


মায়ের ভাষা
মোঃ আরিফ হাসান।
-----------------------------------
একুশ আমার অহংকার,
একুশ, তুমি এলেই প্রতিটি বাঙ্গালীর প্রাণে
তে জেগে ওঠে দুর্বার।

আমার ভাষা, বাংলা ভাষার জন্যই, কতো ভাই দিয়ে গেছে প্রাণ
সালাম রফিক বরকত আরো জব্বার, একুশ এলেই
প্রানেতে বেজেওঠে দুর্বার।

ভাষা শহীদ,
তোমরাই বাংলা ভাষার দামাল
ভাষার জন্যই সংগ্রাম করে আছো,
ইতিহাসে অম্লান।

ভাষা শহীদ,
তোমরা নিজেদের রক্তদিয়ে
 বাংলা ভাষা করেছ অর্জন,
তোমরাই, প্রতিটি বাঙ্গালীর হৃদয়ের দর্পণ।

ভাষা শহীদ,
তোমাদের ত্যাগের জন্যই আজ আমি,বাংলা ভাষায় লিখি,
ওগো মা, আমার বাংলা মা
তোমায় ভালোবাসি।

আমি বাঙ্গালী, তোমাদের জন্যই আজ আমি গল্প কবিতা, বাংলা ভাষায় লিখি,
ইতিহাস খুলেই স্বর্ণ অক্ষরে, তোমাদের নাম গুলি দেখি।

আমার গর্ব, আমি জন্মেছি এই বাংলায়,বাংলা ভাষাকে বিকৃত করে চলছে  কিছু কামলায়।

এজন্যই কি ছিনিয়ে এনেছিল? বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীন বাংলা ভাষা?
হাজার ভাষার ভিড়ে তুমিই শ্রেষ্ঠ, আমার মায়ের ভাষা।

সালাম রফিক বরকত জব্বার তোমাদের ত্যাগের কথাবলে,
শেষ নাহি হবার।

সোনার বাংলা তোমায় ভালোবাসি"
ওগোমা, তোমার কোলেতেই যেন,বার বার ফিরে আসি।

বলে দাও মা-নাছির উদদীন পুটিবিলা


# বলে দাও মা #
নাছির উদদীন পুটিবিলা

সুখে নেই মা, সুখে নেই আজ
তোমার ছেলের মন,
মাদার" বলে তোমাকে ডাকে
শহরে নানান জন।
\
প্রাণের মূল্যে কিনে নিয়েছি
তোমার মুখের ভাষা,
সেই ভাষাতে ডাকিবেনা মা
এমন ছিলনা আশা।
\
তোমার ছেলে প্রাণ দিয়েছে
তোমার ভাষার জন্য,
তাই বলে আজ বিশ্ববাসী
ভাষা দিবস করে গণ্য।
\
ওরা কি জানেনা বায়ান্নতে
দিয়েছি মোদের প্রাণ,
তোমার ভাষা রক্ষার জন্য
জীবন করেছি দান।
\
বলে দাও মা তোমার ছেলেদের
মা ডাকিবার জন্য,
সুমধুর ডাকে ভাষা শহীদের
মরণ হবে ধন্য।

মা কে উপহার-বি.কে হাজারী


মা কে উপহার
    বি,কে, হাজারী
----------------------------
মাগো,তুমি কাঁদছো কেন?
বুলেটের নিষ্ঠুরতা,তোমার সন্তানের বুক ছিদ্র করলো বলে?
মাগো! তুমি কাঁদছো কেন?
সালাম,বরকত,রফিক,শফিক সবাইকে হারালে বলে?
মা তুমি কাঁদছো কেন?
ভাবছো বুঝি, তোমার স্বাধীনতা ছিনিয়ে অানবে কারা?
মা,তুমি যে লক্ষ সন্তানের জননী,
তুমি যে বীরসন্তানের সাহসী জননী
মা, তোমার স্বার্থকতা তো সেখানেই
লক্ষ লক্ষ বীর সেনানির মা হয়ে।।
মা, তুমি ভেঙ্গে পড়ো না,
অামরা তোমার মুক্তিকামী সাহসী যোদ্ধা,
তোমার স্বাধীনতা,ভাষার অধিকার ছিনিয়ে অানবই।
তুমি দেখবে মা
 তোমার দামাল ছেলেরা তোমাকে মুক্ত করবেই।
মা তুমি ভেবো না
৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর তোমার জন্মদিনে উপহার হবে লাল সবুজের পতাকা
অার স্বাধীনদেশের বাংলাভাষা।
মা,মাগো! এবার তুমি নিরবে,প্রশান্তিতে একটু ঘুমাও,
অার দেখো সে উন্নয়নের সোনারবাংলার স্বপ্ন।।

বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

মননশীলতার কবি আরিফ হাসানের কবিতা- আমি নিঃসঙ্গ নিস্তব্ধতায়


আমি নিঃসঙ্গ নিস্তব্ধতায়
মোঃ আরিফ হাসান।

আমি নিঃসঙ্গ নিস্তব্ধতায়,
তুমি খুজে পাবে আমায়
তোমার উপলব্ধিতায়।

আমায় তুমি কখনই বুঝনি,
নিজের মতো করে খোজনি
হৃদয়ের কষ্ট কেন?
বুঝিতে চেস্টাও তুমি করনি।

কেন এই নিঃসঙ্গতা,
কখনই বোঝনি আমার হৃদয়ের ব্যাথা,

অসহায় মানুষের মতই প্রতিনিয়ত ছুটে চলা,
তবুও কাম্য বেচে থাকে যেন মোর পায়ের তলা।

তুমি ভেঙ্গে দিয়েছ মোর বিশ্বাস,
কেড়ে নিয়েছ আমার জীবনের উচ্ছ্বাস,
তাই আজ বন্ধ হবার উপক্রম আমার নিশ্বাস।

হেটে চলার পথে লোকে আমায় বলে ভাল মন্দ, তাতে কিচ্ছু মনে করিনা খুজে বেড়াই শুধু,
তোমার স্নিগ্ধ মাখা, পাগল করা সেই গন্ধ।

আমি উন্মাদ আমি পাগল শুধু তোমারই জন্য,
একবার দিও দেখা, করিও আমায় ধন্য।

আজ আমার হিয়ার মাঝে,
বিনা তারে সেই সুর বাজে
তুমি আসবে ইহকাল অথবা পরকালে।

আমি সেই অপেক্ষায়,
বসে আছি তোমাকে পাবার প্রতিক্ষায়,
তুমি আসবে,সত্যিই তুমি কি আসবে??